গত বছর মে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া বাৎসরিক ডেভলপার কনফারেন্সে গুগল তাদের নতুন দুটি ফোন বাজারে আনার ঘোষনা দেই। Google Pixel 7 এবং Pixel 7 Pro। ফোন দুটির স্পেসিফিকেশনের ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।
শেষ-মেশ অফিশিয়ালি দুটি ফোনই বাজারে ছেড়েছে গুগল। দুটি ফোনেই গুগলের টেনসর জি২ প্রসেসর দ্বারা চালিত। দুটি ফোনের মধ্য শুধু মাত্র ক্যামেরা এবং কিছু ফিচারে পরিবর্তন এসেছে।
এখন আমরা গুগল পিক্সেল ৭ প্রো এর বিস্তারিত আলোচনা করবো..
আরও পড়ুন : বিশ্বের সব থেকে শেরা ৫ টি স্মার্ট ফোন যোটা এখনি কেনা উচিৎ
Google Pixel 7 Pro

গুগল পিক্সেল ৭ এর মতই সকল ফিচারের পাশাপাশি আছে ১২ মেগাপিক্সেল এর ১০x জুম ফিচার। গুগল পিক্সেল ৭ প্রো তে আরো আছে ৪৮ মেগাপিক্সেল টেলিফোটো ক্যামেরা। এই দুই ক্যামেরা দিয়ে কম্পিউটেশনাল ২.৫ থেকে ৫x জুম করতে পারে গুগল পিক্সেল ৭ প্রো। ফোনটির তৃতীয় ক্যামেরা দিয়ে ম্যাক্র মুডে ছবি তোলা যায়।
Google Pixel 7 Pro স্পেসিফিকেশন

ডিসপ্লে
এই ফোনটিতে ৬.৭ ইন্চি এর এলটিপিও এমোলেড ক্যাপাছিটিভ টাসস্ক্রিন ব্যাবহার করা হয়েছে যেটি অনেক হাইকোয়ালিটির একটি ডিসপ্লে।
ডিসপ্লেটির রেজুলেশন ১৪৪০ x ৩১২০ পিক্সেল,১৯.৫:৯ রেশিও।
প্রোটেকটর হিসাবে আছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ভিকটাস।১২০হার্জের HDR10+ রিফ্রেস রেট।
প্লাটফর্ম
গুগল পিক্সেল ৭প্রো তে এনড্রয়েড ভার্সন ১৩ এর সুবিধা থাকছে।চিপ হিসেবে আছে গুগলের নিজস্ব প্রসেসর google tensor g2(4nm)।এটি একটি অকটা কোর প্রসেসর। এর জিপিউ সিসটেম হিসাবে আছে Mali-G710 MC10
মেমরি
এক্সট্রা মেমরি ব্যাবহারের কোনো সুযোগ নেই। ফোন মেমরি হিসাবে আছে তিনটি ভ্যারিয়েন্ট ১২৮/২৫৬/৫১২ জিবি।
RAM হিসাবে আছে ১২ জিবি।
আরও পড়ুন : ৪০ হাজার টাকার নিচে শীর্ষ ৩ টি সেরা স্মার্টফোন ২০২৩
ক্যামেরা

ফোনটির ক্যামেরা সেকশনে আছে প্রাইমারি ক্যামেরা ৫০মেগাপিক্সেল মেইন সেন্সর, ৪৮ মেগাপিক্সেল এর টেলিফটো লেন্স এবং ১২ মেগাপিক্সেল এর আল্ট্রাওয়াইড সেন্সর। সেলফি ক্যামেরা হিসাবে আছে ১০.৮ মেগাপিক্সেল এর সেকেন্ডারি ক্যামেরা।ডুয়াল এলইডি ফ্লাশ।ভিডিও মুড হিসাবে পাচ্ছেন 4k@30/60 fps এবং 1080@30/60/120/240fps যা দ্বারা ভিডিও গ্রাফিতে পাচ্ছেন দারুন মজা।
ফোনটির বিল্ড কোয়ালিটি
ফোনটির বডিতে 162.9 x 76.6 x 8.9 mm। ফোনটির ওজন ২১২গ্রাম।সিম সিসটেমে আছে ন্যানো সিম এবং ইসিম এর সুবিধা।সাউনড সিস্টেমে আছে স্টেরিও স্পিকার।
ফোনটিতে ফিচার হিসাবে আছে ইন ডিসপ্লে ফিংগারপ্রিন্ট।
ব্যাটারি
ফোনটিতে ব্যাটারি হিসাবে আছে লিথিয়াম নন-রিমোভেবল ৫০০০ এম্পিয়রের একটা সেল। এবং চার্জার হিসাবে আছে ২৩ ওয়াটের চার্জার এবং ২৩ ওয়াট ওয়ারলেস চার্জিং সিস্টেম। ৫০% চার্জ হবে মাত্র ৩০ মিনিটে।
বর্তমান বাজারে গুগলের কম্পেয়ার
চলুন গুগল পিক্সেল ৭ প্রো এর সাথে যদি আমরা অন প্লাস ৮ প্রো এর একটা কম্পেয়ার করে দেখি।গেমিং টেস্ট করে যে ফলাফল পাওয়া যায়।
গেমিংটেস্ট
গুগল পিক্সেল ৭ প্রোতে গেমিং টেস্ট করলে আমরা প্রথমে ফ্রি-ফায়ার টেস্ট করে দেখলাম এটাতে গ্রাফিক্স ফুল দিয়ে আল্ট্রা মুডে গেম খেললেও কোনো প্রকার ল্যাগ বা ফ্রেম ড্রপ দেখা যায়না খুব স্মুথ ভাবে গেমটি রান করছিল।এভাবে প্রাই ২-৩ ঘন্টা ফ্রি-ফায়ার খেলার পর হালকা একু গরম ভাব বোঝা যাচ্ছিলো যা স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছিল।

কিন্তু ওয়ান প্লাসে ২ ঘন্টা ফ্রি-ফায়ার খেলার পর ভালোই ল্যাগ এবং গরম অনুভব করলাম। এর পর ট্রেন্ডিং বিজিএমআই খেলেও দেখলাম অনপ্লাস ৭প্রোই সেরা। পাবজি খেলে দেখলাম ফুল গ্রাফিক্স এ তেমন একটা ভালো পার্ফমেন্স করছিলোনা ওয়ান প্লাস এবং গুগল পিক্সেল ৭প্রো একটু ল্যাগি ল্যাগি ফিল হচ্ছিলো।
এসফল্ট ৯ ট্রাই করে দেখলাম পিক্সেল ৭ প্রো তে খুব সুন্দর চলছিলো এবং ওয়ান প্লাস ৮ প্রো তেও ভালোই চলছিলো তবে মনে হচ্ছি বেসিক্ষন খেললে ফোনটি অধিক গরম হবে।
ক্যামেরা টেস্ট
দুটি ফোনের ক্যামেরা টেস্ট করলে দেখা যায়, ওয়ান প্লাস ৮ প্রোতে আছে দুটি ৪৮ মেগাপিক্সেল এর ক্যামেরা সহ ৮ মেগাপিক্সেল টেলিফোটো এবং ৫ মেগাপিক্সেল এর আল্ট্রাওয়াইড সেন্সর। এদিকে গুগল পিক্সেল এ আছে ৫০ মেগাপিক্সেল এর মেইন শুটার, ৪৮ মেগাপিক্সেল এর সেকেন্ডারি সুটার এবং ১২ মেগাপিক্সেল এর টেলিফটো লেন্স। দুটি ফোনের মধ্য সর্বদা লো লাইট এবং ব্রাইটে গুগলের পিক গুলো বেসি ডিটেলস ধরে রাখছে এবং অনেক সার্প ফটো।

আমরা আগাগোড়াই জানি যে ক্যামেরার জন্য বেস্ট ফোন হলো গুগল পিক্সেল। ভিডিও কোয়ালিটি দেখলে দেখা যায় যে ওয়ান প্লাসের তুলনাই গুগল পিক্সেল ৭ প্রো এর ভিডিও ফিচার বেশি এবং ভিডিও কোয়ালিটি বলতে গেছে গুগল পিক্সেল ৭ প্রো এগিয়ে থাকবে। বেটার রেজুলেশন পাবেন এই ফোনটিতে। এছাড়াও আরো অনেকন প্রকার সুবিধা।
আরও পড়ুন : শাওমি নিয়ে আসলো Xiaomi Redmi 12। মিড রেঞ্জে, সাথে আছে ২০০ মেগা পিক্সেল এর ক্যামেরা।
ব্যাটারি- ক্যাপাসিটি
ব্যাটারি ব্যাকআপের দিকে থেকে টেস্ট করলে দেখা যায় যে, গুগল পিক্সেল ৭ প্রো এর ব্যাটারি ৫০০০ এম্পিয়র এবং ওয়ান প্লাস ৮ প্রো এর ব্যাটারি ৪৫১০ এম্পিয়র এর। সুতরাং চার্জিং ব্যাকআপের দিক থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে গুগল পিক্সেল এগিয়ে থাকবে।

সুতরাং কম্পেয়ার করতে গেলে দেখা যাচ্ছে যে গুগল পিক্সেল ৭ প্রো এবং ওয়ান প্লাস ৮ প্রো এর মধ্য সর্বাধিক থেকেই গুগল পিক্সেল ৭ প্রো এগিয়ে আছে।
গুগল পিক্সেল এর ফোন গুলো খুবি হার্ডি হয়ে থাকে তারা অ্যাপেলের মত নিজস্ব চিপ ব্যবহার করে। এজন্য ফোনে অনেক শক্তিশালি হয়ে থাকে।
শেষ কথা
বর্তমান বিশ্ব হলো টেকনোলজির যুদ্ধের বিশ্ব। এখানে যে যত ভালো জিনিস বানাবে তারা ততো উপরে উঠবে। স্মার্টফোন হলো বর্তমান বিশ্বের একটি সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ন আবিস্কার। আর এই স্মার্ট ফোন তৈরি করে হাজার হাজার কম্পানি। এসব কম্পানির মধ্য গুগল হলো একটি অন্যতম কম্পানি তারা তাদের স্মার্ট ফোন গুলো খুবি নিক্ষুত ভাবে তৈরি করে।তাদের এই স্মার্ট ফোন গুলোর ভিতরে নতুন সিরিজের লেটেস্ট ফোন হলো গুগল পিক্সেল ৭ প্রো।

ফোনটির ফিচার থেকে শুরু করে সকল স্পেসিফিকেশন অনেক ভালো মানের। যারা এই ফোনটি সম্পর্কে বিস্তারিত আগে থেকেই জানতেন তারা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন এবং এরাকম আরো নতুন নতুন নিউজ পেতে আমাদের সাথে থাকুন, এর পর কোন ফোন নিয়ে নিউজ রিপোর্ট করবো সেটাও কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিন। দেখা হবে আবার নতুন কোনো পোস্টে ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন : ঝড় তুলবে AI, গুগল নিয়ে আসছে আরও উন্নতমানের সার্চ ইঞ্জিন