ভবিষ্যতের ১০ টি টেকনোলজি এবং আবিষ্কার যা বিশ্বকে বদলে দেবে

প্রাচীন যুগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত যে যাত্রা মানুষ করেছে, এটা কখোনো সহজ ছিলো না। অনেক যুদ্ধ করে টিকে থাকার লড়ায় করে এই পর্যন্ত এসেছে। নানা ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়েছে। প্রাচিন কালে মানুষ বর্বর ছিলো এখোন সভ্য এবং আধুনিক। বর্তমান বিশ্ব আধুনিক হতে হতে এতোটাই এগিয়ে যাচ্ছে যা বলে শেষ করা যাবে না। মানুষের নিত্য নতুন আবিস্কার পৃথিবীতে এতোটা প্রভাব ফেলছে যে বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। চলুন দেখে আসি ভবিষ্যতের ১০ আবিস্কার যেগুলো বদলে দিবে পুরো পৃথিবীকে।

আরো পড়ুন : অ্যান্ড্রয়েডের দিন শেষ এবার নতুন সব এডভান্স ফিচার নিয়ে আসছে iOS 17

১.ফিউশন শক্তি

জীবাশ্ম জ্বালানি আমরা যে ভাবে ব্যবহার করি তাতে জ্বালানির ঘাটতি পরতে খুব বেশিদিন সময় লাগবেনা। সকল শক্তির উৎসের ক্ষেত্রে একই অবস্থা। যত দিন যাচ্ছে ততোই পৃথিবীর যত শক্তির উৎস সে গুলো শেষ হতে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পৃথিবী ভারসম্য হারাবে যার। এই শক্তির ঘাটতি পুরনের জন্য কাজ করবে ফিউশন শক্তি।এই শক্তি ব্যবহারে নির্ভরশীলতায় নতুন এক মাত্রা যোগ করবে এবং পৃথিবীর সমানের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

সেই ১৯৫০ সাল থেকে ফিউশন শক্তি নিয়ে গবেষনা শুরু হয়, তখন যদি এই শক্তি আবিস্কার করতে পারতো তাহলে এতো দিনে পৃথিবীতে অনেক শক্তি সঞ্চয় হতো।আপনারা জানেন না হয়তো যে বিজ্ঞানিরা বলেছেন মাত্র ১কি.গ্রাম ডিউটোরিয়াম থেকে যে পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করা সম্ভব যা তিয়ে ১০ লক্ষ বাড়িকে বিদ্যুতের আওতায় আনা সম্ভব। কিন্তু এই ডিউটোরিয়াম পাওয়া যায় পানি থেকে যা খুব কঠিন। কিন্তু এর পরও মানুষের আবিস্কার পৃথিবীকে আশা জাগায়।

২.মহাকাশে বসবাস 

ভবিষ্যতের ১০ টি টেকনোলজি এবং আবিষ্কার যা বিশ্বকে বদলে দেবে

মহাকাশে বসবাসের প্রবনতা সেই কয়েকশ বছর আগে থেকেই মানুষের মধ্য আছে। নাসা ১৯৭০ সালে মহাকাশে বসবাসের জন্য বসতি নির্মাণের জন্য খসড়া প্রদান করে।  এই সম্ভাব্য প্রক্রিয়ার বাজেট রাখা হয়েছিলো ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই চিন্তাটা পৃথিবীর মানুষের মধ্য একটি ভাবনার সৃষ্টি করে, সবাই নিজেকে মহাকাশের নায়ক মনে করতে থাকে। 

কলনিগুলো অবস্থিত্ব হবে ল্যাগ্রানজিয়ান পয়েন্টে যেটা L5 নামে পরিচিত। স্থানটা পৃথিবী   চাদঁ সূর্য থেকে নিরাপদ স্থানে অবস্থিত্ব এবং বেশ নিরাপদ। প্রত্যেকটা কলনি স্বনির্ভর এবং কৃষি এলাকা নিয়ে গঠিত।

ও’নেইল  সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে এটি হবে ৫ মাইল প্রসস্ত এবং ২০ মাইর পর্যন্ত লম্বা। এক সাথে তিন টুকরা ভুমি পরস্পর যুক্ত থাকবে এবং কলোনিগুলো সক্ষম থাকবে নিজেদের মাধ্যাকর্ষণ নিয়ন্ত্রনে। এ ধরনের মহাকাশীয় ব্যাবস্থা গুলো মানুষ কে শুধু পৃথিবীর বাইরে নয়  সৌর জগতের বাইরেও বসবাসের স্বপ্ন দেখাই।  

আরো পড়ুন : ঝড় তুলবে AI, গুগল নিয়ে আসছে আরও উন্নতমানের সার্চ ইঞ্জিন

৩.কৃত্রিম মাধ্যাকর্ষণ

বিজ্ঞানের শতশত আবিস্কার এখোনো মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেনি। যার ফরে কখোনো সম্ভব হয়না অনুকূল পরিবেশ তৈরি। কৃত্রিম মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আবিস্কার করলে, মহাকাশীয় অনেক ফাদঁ থেকে বের হয়ে আসার রস্তা বের করতে পারবে।তাত্ত্বিকভাবে বলকে একত্র করার মাধ্যমে কৃত্রিম মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সৃষ্টি করা সম্ভব। এজন্য দরকার বেশ ভারি পরিমানে মহাশূন্য যন্ত্রাংশ। 

৪.হ্যালো -গ্রাফি

প্রযুক্তির আবিস্বকারের সাথে সাথে চাপা পড়ে গেছে ত্রিমাত্রিক হ্যালোগ্রাম। এক সময় এটার ব্যাবহার ছিলো ব্যাপক। কিন্তু কিছু কিছু দেশ এখোনো হ্যালোগ্রাম নিয়ে কাজ করছে।বলা হচ্ছে যে ভবিষ্যতে হ্যালোগ্রামের সাহায্যে যোগাযোগ করা যাবে সুদুর দূরত্ব পর্যন্ত। একজনের সাথে আরাক জন বিরামহিন যোগাযোগ করতে পারবে, মনে হবে যেন তারা পাশাপাশি বসে আছে।

৫.উরন্ত গাড়ি

ভবিষ্যতের ১০ টি টেকনোলজি এবং আবিষ্কার যা বিশ্বকে বদলে দেবে

 অনেক আগে থেকেই বিজ্ঞানিরা উড়তে সক্ষম গাড়ি আবিস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে উড়ন্ত গাড়ির জন্য বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবেনা।  সম্প্রতি Uber কম্পানির একটা নিউজে বলা হয়েছে তারা খুব শিগ্রয় ‘এয়ার ট্যাক্সি বহর ‘ চালু করতে যাচ্ছে। তাদের সাথে যুক্ত আছে নানা সংস্থা।যদি সত্যি এটা তৈরি করা সম্ভব হয় তাহলে মানব সভ্যতা নতুন।

একটি ধরায় প্রবেশ করবে।ড্রনের ধারনা থেকেই মূলত এটি তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে। এই আবিস্কারের ফলে মানুষের জিবন যাত্রার মান উন্নত হবে কারন কোনো প্রকার জ্যামে পড়তে হবেনা। অনেক সময় বাচবে কর্মজীবনে। 

৬.ইমার্সিভ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি –

ভবিষ্যতের যত গুলো আবিস্কারের ভাবনা আছে তার মধ্য ইমার্সিভ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অন্যতম। পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে ভার্চুয়াল জগতে রুপান্তরিত করবে। সত্যি বলতে বাস্তব অবাস্তব এর মধ্য কোনো তফাত থাকবেনা। সাংস্কৃতিক ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির কারনে এটা নিয়ে সেই ভাবে আগানো হয়নি।  কিন্তু ধরনা করা যায় যে সামনের দিকে ভার্চুয়াল জিবন নতুন মোড়ে পা রাখতে যাচ্ছে।গেমিং এর বিষয়টাও এর আওতাই চলে গেছে। গেম খেলেও ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দেওয়া যাচ্ছে তাহলে মাঝরাতে কেন বাড়ির বাইরে বের হতে হবে?  

আরো পড়ুন : সবথেকে বুদ্ধিমান শক্তিশালী এই রোবট যা ভবিষ্যতে পৃথিবীকে বদলে দেবে !

৭.ব্যাক্তিগত রোবট সহকারী-

অনেক দিন হয়েছে বিশ্বে রোবটের ব্যবহার শুরু হয়েছে। বর্তমানে রোবোট দিয়ে মানুষের সকল ধরনের কাজ করানো যায়। প্রতিষ্ঠানের গার্ড হিসাবেও ব্যবহার হয়। রোবোট সোফিয়া কে নিয়েতো কিছুদিন সারা বিশ্বে তোলপাড় ছিলো। কিন্তু ব্যাক্তিগত সহকারী রোবোট আবিস্কারে ব্যার্থ ছিলো বিজ্ঞানিরা। কিন্তু বর্তমানে অ্যাপেলের সিরি এবং অ্যামাজনের অ্যালেক্সা এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে আছে। তাই ধারণা করা যাচ্ছে যে সামনের দিকে রোবট আগামির বিশ্বের মানুষকে ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে।

৮.স্বচালিত ডেলিভারি গাড়ি –

‘নুরো আরটু’ এটি হলো একটি স্বচালিত ডেলিভারি গাড়ি যার দ্বারা মানুষ বিভিন্ন স্থান থেকে খাবার অর্ডার করে এবং গাড়িটি নিজে নিজে উক্ত স্থানে গিয়ে খাবার পৌছে দেই। বিজ্ঞানিদের মতে এটা হলো এতো দিনের সেরা বানিজ্যিক সফল গাড়ি।যেটা আবিষ্কারেরর ফলে ভবিষ্যত বদলে দেবে।

৯.আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের মেগা ভার্সন

আমরা জানি বর্তমানে বিশ্বের সেরা আবিষ্কার হলো AI অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এই AI এর সাহায্যে এখন মানুষের অনলাইন জগতের কঠিন ও জটিল কাজ গুলো একদম সহজে করে ফেলা যাচ্ছে। আগে কোনো বিষয়ে একটা কনসেপ্ট বানাতে যেখানে কয়েক ঘন্টা লাগতো এখন সেই একি কাজ Ai এর মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডে করা সম্ভব হয়। ভবিষ্যতে  এই Ai এর মেগা ভার্সন আসলে ভবিষ্যতের অনেক পরিবর্তন হতে পারে।

১০.মাইনড কন্ট্রল স্মার্ট ফোন –

বেশ কিছু তিন আগে একটা নিউজ থেকে জানা যায় যে’ ইলোন মাস্ক ‘ তার তেসলা ব্রান্ডের একটি স্মার্টফোন তৈরি করবে যেটার ফিচার থাকবে মাইন্ড কনট্রল। যারর মানে হলো মানুষ যা ভাববে ফোনে তাই হবে। যে অ্যাপের কথা ভাববে সেই অ্যাপ ওপেন হয়ে যাবে এবং এই ফোনের আরো একটা ফিচার হলো এটি স্যাটেলাইট এর সাথে সরাসরি যুক্ত থাকবে যার ফলে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে এই ফোনের নেটওয়ার্ক ফুল থাকবে। সুতরাং এমন একটি স্মার্ট ফোন যদি ইলোন মাস্ক তৈরি করে তাহলে এটি ভবিষ্যতের জন্য অনেক বড় অবদান রাখবে।

শেষ কথা

পরিশিষে বোঝা যায় এই ১০ টি আবিষ্কার পৃথিবীর ভবিষ্যত পাল্টে দেবে। যাদের কাছে এই পোস্ট টি ভালো লেগেছে তারা কমেন্ট করুন এবং পাসে থাকুন ধন্যবাদ। 

আরো পড়ুন : বিশ্বের সব থেকে শেরা ৫ টি স্মার্ট ফোন যোটা এখনি কেনা উচিৎ

আমি মাহদি হাসান সরকার, একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার এবং টেকনোলজি এক্সপার্ট. ৭ বছর থেকে বিভিন্ন কম্পানির সাথে একজন প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করে আসছি . এ জন্য টেকনোলজি নিয়ে আমার অনেকটা ধারনা আছে. ভাবলাম আমি যতো টুকু পারি ততো তুকিই যদি আপনাদের সিখাই তাহলে বর্তোমান পৃথীবিতে আপনাদের চলতে অনেকটা সহজ হয়ে জাবে।

Leave a Comment